৭ মাসে ২৫টা বিয়ে! সব হাতিয়ে পগারপার! সারা দেশের ত্রাস ‘লুটেরি দুলহন’ শেষমেশ পুলিশের জালে

কলকাতা- ৭ মাসে ২৫বার বিয়ে! প্রত্যেকবার নতুন শহর, নতুন নাম, নতুন পরিচয়। পুরুষদের জালে ফেলে সে বসত বিয়ের পিঁড়িতে। তার পর লুটপাট।

বিয়ে করেই সে আদর্শ কনে, নিখুঁত পুত্রবধূ। খেলা চলত কয়েকদিন, তার পরেই গয়না এবং নগদ টাকা নিয়ে পগার পার। একবার-দু’বার নয়, ২৫ বার ঘটেছে এই ঘটনা। গত সাত মাসে প্রতারিত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন পুরুষ। তবে এ বার তার খেলাতেই তাকে পরাস্ত করল পুলিশ। নকল বিয়ের জালেই ধরা পড়ল ‘লুটেরি দুলহন’ অনুরাধা পাসওয়ান।

অনুরাধা বিয়ে করতে চায় কিন্তু আর্থিক সমস্যার জন্য বিয়ে করতে পারছে না। তার বয়স ৩২ বছর। সে একেবারেই পাশের বাড়ির মেয়ে, ‘সুন্দরী অথচ দরিদ্র বধূ’। এর আড়ালে যে মহিলা লুকিয়ে ছিল, সে এক জাল বিবাহ চক্রের নেত্রী। তার গ্যাংয়ের সদস্যদের কাজ ছিল তার হয়ে ঘটকালি করা। অনুরাধার ছবি এবং পরিচয় নিয়ে তারা যেত সম্ভাব্য শিকার অর্থাৎ, বিয়ে করতে চাইছেন এমন ব্যক্তিদের কাছে।

বিয়ের কথা পাকা হওযার পর গ্যাং সদস্যরাই একটি হবু বরদের দিয়ে একটি সম্মতিপত্রে সই করিয়ে নিতেন। এর পরে বিয়ে হতো কোনও মন্দিরে বা বাড়িতে। এখান থেকেই শুরু হতো আসল নাটক। বর এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যান্যদের সঙ্গে অতি ভালো আচরণ করত অনুরাধা। নতুন বউয়ের প্রশংসা শোনা যেত সকলের মুখে। সকলের আস্থা অর্জনের পরেই স্বমূর্তি ধারণ করত সে। তার পরিকল্পনার চূড়ান্ত পদক্ষেপ ছিল, খাবারে নেশার দ্রব্য মিশিয়ে বাড়িকর সকলকে বেহুঁশ করে গয়না, নগদ এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পলায়ন।

যে ২৫ জনকে ঠকিয়েছে ‘লুটেরি দুলহন’ তাঁদের অন্যতম রাজস্থানের সাওয়াই মাধোপুরের বাসিন্দা বিষ্ণু শর্মা। তিনি জানতেন অনুরাধা মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। বন্ধুবান্ধব এবং পরিজনদের উপস্থিতিতে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু বিয়ের দুই সপ্তাহের মধ্যেই, স্বপ্নভঙ্গ হয় তাঁর। ১.২৫ লক্ষ টাকার গয়না, নগদ ৩০,০০০ টাকা এবং ৩০,০০০ টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল অনুরাধা। এর পর পুলিশ ফাঁদ পাতে। এক কনস্টেবলকে বর সাজানো হয়। অনুরাধার গ্যাং-এর যে সদস্যরা ঘটকালি করতেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ভোপালে আয়োজন করা হয়েছিল নকল বিয়ের। তার পর অনুরাধা ধরা পড়ে পুলিশের জালে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *