কলকাতা- আমেরিকায় দুই চীনা নাগরিককে বিষাক্ত ছত্রাক পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই দুই নাগরিকের কাছে যে প্যাথোজেন উদ্ধার হয়েছে সেগুলি শস্যের যম। এই গ্রেপ্তারির ফলে বড়সড় বিপর্যয় এড়াতে পেরেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ। এরপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে চাষের জমিই কি নতুন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে? কৃষিসন্ত্রাসই কি ভবিষ্যৎ? যে সন্ত্রাসে ভুক্তভোগী খোদ ভারতও।
কৃষি বা কৃষিভিত্তিক ক্ষেত্রগুলি তুলনামূলকভাবে সহজ লক্ষ্যবস্তু। এখানে আক্রমণ শনাক্ত করা কঠিন। খাদ্যব্যবস্থা সহজেই অস্ত্রে পরিণত হতে পারে। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলির অর্থনীতিকে ধ্বংস করার একটি সাশ্রয়ী উপায়। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, চীনের গবেষক জুনিয়ং লিউ ছত্রাকটি পাচার করার চেষ্টা করেছিলেন যাতে তিনি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে সেটির পরীক্ষা করতে পারেন। সেখানে তাঁর বান্ধবী ইউনকিং জিয়ান কাজ করতেন। বিবিসি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন যে জিন এই জীবাণু নিয়ে গবেষণার জন্য চীনা সরকারের কাছ থেকে টাকা পেয়েছিলেন।
ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারাম নামে ছত্রাকটিকে আমেরিকায় ‘সম্ভাব্য কৃষি-সন্ত্রাসবাদের অস্ত্র’ হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। গম, বার্লি, ভুট্টা এবং ধানের মতো ফসল ধ্বংস করার পাশাপাশি, এটি মানুষের মধ্যে প্রবেশ করলে বমি এবং লিভারের ক্ষতি হতে পারে। জৈব অস্ত্র ব্যবহার করে শস্য ধ্বংস করাকেই কৃষি সন্ত্রাসবাদ বলে। লক্ষ্যটি সহজ- অর্থনীতিকে ধ্বংস করা এবং সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করা। ধরা পড়ার সম্ভাবনা ন্যূনতম, এবং এর খরচও কম। এই জৈবিক আক্রমণের বিরুদ্ধে ফৌজদারি শাস্তি আরোপের কোনও আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামো নেই।
যদিও এই ধরণের আক্রমণ নতুন নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেনের আলুক্ষেতে গুবরে পোকা ছেড়ে দিয়েছিল জার্মানি। বিমান থেকে ওই পোকা কৃষিজমিতে ছাড়া হয়েছিল। জাপান আমেরিকা এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গমক্ষেতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। প্রায় একই পরিকল্পনা ছিল আমেরিকারও। কিন্তু তারা সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসে জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা হামলা চালায়।