কলকাতা – চিপ্স চুরির অপবাদ! সুইসাইড নোটে ‘মা আমি চুরি করিনি’ লিখে আত্মঘাতী পাঁশকুড়ার সপ্তম শ্রেণির স্কুল ছাত্র
পাড়ার দোকান থেকে চিপ্সের প্যাকেট চুরির অভিযোগ উঠেছিল বছর তেরোর এক কিশোরের বিরুদ্ধে। তাকে কান ধরে ওঠবোস করতেও বাধ্য করেছিলেন দোকানদার। মা-ও বকাঝকা করে। তার পরই চরম সিদ্ধান্ত।
পাড়ার দোকান থেকে চিপ্সের প্যাকেট চুরির অভিযোগ উঠেছিল বছর তেরোর এক কিশোরের বিরুদ্ধে। তাকে কান ধরে ওঠবোস করতেও বাধ্য করেছিলেন দোকানদার। মা-ও বকাঝকা করেছিলেন সকলের সামনে। ওই চুরির ‘অপবাদ’ সহ্য করতে না পেরে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হল সপ্তম শ্রেণির ওই স্কুলছাত্র। পরিবারের দাবি, আত্মহত্যার আগে নিজের খাতায় সে লিখেছে, ‘‘মা আমি চুরি করিনি।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার গোঁসাইবেড় এলাকার ঘটনা। মৃত ছাত্রের নাম কৃষ্ণেন্দু দাস। স্থানীয় বাকুলদা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত সে। বৃহস্পতিবার কিশোরের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। গোটা ঘটনায় পুলিশে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পাঁশকুড়া থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত রবিবার শুভঙ্কর দীক্ষিত নামে এক ব্যক্তির মিষ্টির দোকান থেকে তিনটে চিপ্সের প্যাকেট চুরির অভিযোগ উঠেছিল কৃষ্ণেন্দুর বিরুদ্ধে। যদিও স্থানীয়দের দাবি, চিপ্সের প্যাকেটগুলি হাওয়ায় উড়ে গিয়েছিল। সেই সময় রাস্তা দিয়ে সাইকেল নিয়ে যাচ্ছিল কৃষ্ণেন্দু। সে বুঝতে পারেনি প্যাকেটগুলি কোথা এসেছে। রাস্তায় পড়ে রয়েছে ভেবে সে কুড়িয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছিল। তা দেখতে পেয়েই কিশোরকে ধরেন শুভঙ্কর।
চিপ্সের প্যাকেট চুরির জন্য তিনি কৃষ্ণেন্দুকে তিরস্কারও করেন। তাকে বাধ্য করেন কান ধরে ওঠবোস করতে। এর পরেই ওই কিশোর দোকানদারকে চিপ্সের প্যাকেটের জন্য ২০ টাকা দেন। দোকানদার ফেরতও দেন পাঁচ টাকা। ওই ঘটনার কথা লোকমুখে জানতে পেরে কৃষ্ণেন্দুর মা আবার ছেলেকে শুভঙ্করের দোকানে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে ছেলেকে বকাবকিও করেন তার মা। পরিবারের দাবি, ওই ঘটনার পরেই বাড়ি ফিরে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করে কৃষ্ণেন্দু।
কিশোরকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা নাগাদ হাসপাতালে মৃত্যু হয় কৃষ্ণেন্দুর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিষ্টির দোকান চালানোর পাশাপাশি শুভঙ্কর স্থানীয় থানার সিভিক ভলান্টিয়ারও। কিশোরের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তিনি পলাতক।