কলকাতা- এমন ঘটনা যে ঘটে যেতে পারে, তা হয়তো কেউ ভাবেনি। যার জন্য এত কিছু, সে আজ নেই। অকাল মৃত্যু কেড়ে নিয়েছে। আসানসোলের ইসমাইলের বাসিন্দা থৈবি মুখোপাধ্যায়। চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে স্কুলের সেরা। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৪। পশ্চিম বর্ধমান জেলার সেরা ১০ জনের মধ্যে রয়েছে তার নাম। এদিকে শুক্রবার সকালে রেজাল্ট জানার পর থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন থৈবির বাবা-মা ও পরিবারের বাকি সদস্যরা। একই অবস্থা স্কুলেও।
আসানসোল উমারানি গড়াই মহিলা কল্যাণ স্কুলের ছাত্রী থৈবি মুখোপাধ্যায়। বাবা বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। মা পিউ মুখোপাধ্যায় গৃহবধূ। বরাবর স্কুলের মেধাবী ছাত্রী হিসেবে পরিচিত ছিল থৈবি। চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে থৈবির জন্ডিস ধরা পড়ে। পরীক্ষা শেষ হতেই চিকিৎসা করাতে মেয়েকে নিয়ে ভেলোর ছুটে গিয়েছিলেন বাবা ও মা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা। পরীক্ষার পরে চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তার লিভার ট্রান্সফার করতে হবে। খরচ হবে প্রায় ১ কোটি টাকা। এগিয়ে আসে থৈবির স্কুল। চিকিৎসার জন্য পাশে দাঁড়ান সাধারন মানুষ। প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকার অর্থ সাহায্য পায় থৈবির পরিবার। তবুও বাঁচানো যায়নি তাকে। অন্য রাজ্যের হাসপাতালে গত ১৬ এপ্রিল মৃত্যু হয় থৈবির।
থৈবির মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে ১৭ দিন। এদিন মাধ্যমিকের রেজাল্ট বের হতেই দেখা যায় বাংলায় ৯৯, অংকে ৯৮, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৭, জীবন বিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯৫ ও ভূগোলে ৯৫ পেয়েছে সে। রেজাল্ট হাতে নিয়ে চোখের জল যেন বাঁধ মানছে না পরিবারের সদস্যদের। থৈবির স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পাপড়ি বন্দোপাধ্যায় বলেন, থৈবি সুস্থ অবস্থায় পরীক্ষা দিলে রাজ্যের ১০ জনের মধ্যে একজন হতে পারত।