শিক্ষক বাবার ছেলে! দেড় কোটি টাকা ছিল মাথার দাম! কে এই মাওবাদী নেতা বাসবরাজু?

কলকাতা – ৩১ মার্চ, ২০২৬। দেশ থেকে নকশাল উগ্রপন্থা শেষ করার ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সেই লক্ষেই নিখুঁত ছকে চলছে মাওবাদী দমন অভিযান ‘অপারেশন ব্ল্যাকফরেস্ট’। ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্রের পাহাড় জঙ্গলে এই অপারেশনে বহু মাওবাদী মৃত্যুর খবর আসছে।

৫৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, ৮৪ জন আত্মসমর্পণ করেছে। এরই মধ্যে সম্ভবত বাহিনীর সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে বুধবার। ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর, বিজাপুর ও দান্তেওয়াড়া জেলার সীমানায় অবুঝমাড়ের জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এদিন ৩০ মাওবাদী গেরিলার মৃত্যু হয়েছে।

মৃতদের মধ্যেই রয়েছেন সিপিআই মাওবাদীর সর্বোচ্চ নেতা নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু। সূত্রের খবর, দান্তেওয়াড়া-নারায়ণপুর-বীজাপুরের সীমানায় বাসবরাজুর আসার খবর ছিল গোয়েন্দাদের কাছে।

সেই খবরের ভিত্তিতেই ভোররাত থেকে শুরু হয় অভিযান। ছত্তিশগড় পুলিশের ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের জওয়ান ও মাওবাদীদের মধ্যে বুধবার ভোররাত থেকে তীব্র গুলির লড়াই বেঁধে যায়। অভিযানে নারায়ণপুর, বিজাপুর এবং দান্তেওয়াড়া জেলার ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের জওয়ানরা অংশ নিয়েছিলেন। সেই সংঘর্ষেই মৃত্যু হয় বাসবরাজুর।

সিপিআই মাওবাদীর (CPI Maoist) সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন বাসবরাজু। সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা কোনও নেতার এনকাউন্টারে মৃত্যুর ঘটনা নজিরবিহীন।

অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার জিয়ানপেটে জন্ম বাসবরাজুর। বয়স ৬৮ থেকে ৭০। বাবা ছিলেন শিক্ষক। ১৯৮০-এর দশকে ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি ওয়ারাঙ্গল রিজিওনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (REC) ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন।

সরকারের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। নিমেষে আইইডি তৈরি করা, নিখুঁত পরিকল্পনা, অতর্কিত হামলা, জঙ্গল যুদ্ধে পারদর্শী এই নেতা মাওবাদিদের সশস্ত্র উইংয়ের কমান্ডার ছিলেন। ১৯৮৭ সালে গণপতি ও প্রয়াত কিষেনজির সঙ্গে বস্তারের অবুঝমার জঙ্গলে এলটিটিইর কাছ থেকে বিস্ফোরক তৈরি ও জঙ্গলযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন।

তার নেতৃত্বেই ২০১০ সালে দান্তেওয়াড়ায় আধা সামরিক বাহিনীর উপর দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয় বলে মনে করেন গোয়েন্দারা। যেই হামলায় ৭৬ জন জওয়ান নিহত হন।  ২০১৮ সালে, সিপিআই মাওবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক মুপ্পালা লক্ষ্মণ রাও ওরফে গণপতি অসুস্থ হয়ে পড়ায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন নাম্বালা কেশব রাও।

সরকার তার মাথার দাম ঠিক করে ১.৫ কোটি টাকা। এনআইএর কাছে মোস্ট ওয়ান্টেড এই মাওবাদী নেতার কোনও সাম্প্রতিক ছবি বা নিশ্চিত বিবরণ ছিল না। যার জেরে চিহ্নিত করা সম্ভব হত এই নকশাল নেতাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *